দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি :
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের ঘর পেয়ে খুশিতে বিষাদ গৃহহীনদের। নতুন বরাদ্দ পাওয়া বাড়িতে নিম্নমানের কাজ হওয়ায় বসবাস করা নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করছে তারা। মঙ্গলবার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ৩৬টি বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের খোলাশগ্রামে নির্মিত ঈদ উপহারের ১৯টি বাড়ির বরাদ্দপ্রাপ্তদের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তারা। তবে তাদের সেই উচ্ছ্বাসের সাথে বেরিয়ে আসে হতাশার সুরও। বসবাস করার জন্য এখনও বাড়িগুলো তেমনভাবে উপযুক্ত নয় বলে অভিযোগ বরাদ্দপ্রাপ্তদের।
মালা খাতুন (২৭) জানায় , নতুন বাড়ি পেয়ে অনেক খুশি হয়েছে তার পরিবার। ৮ বছর পূর্বে বিয়ে হলেও নিজের জায়গায় সংসার পাততে পারেনি। এখন নিজের ঘর হয়েছে। তবে বসবাস করা নিয়ে হতাশাও প্রকাশ করে সে। স্বামী জুয়েল মোল্লা দুরদুরান্তের মেলাগুলোতে খেলনা সামগ্রীর দোকান করতে চলে যায়। ফলে মাঝে মাঝে তাকে ছোট দুই সন্তান নিয়ে একা বসবাস করতে হয়। কিন্তু বরাদ্দকৃত বাড়ির দরজা জানালাগুলো ঠিকমত আটকানো যায় না। অর্ধখোলা অবস্থায় রাখতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় শুধু ছোট সন্তানদের সাথে বরাদ্দপ্রাপ্ত বাড়িতে রাত্রিযাপন করা নিয়ে শংকা বিরাজ করছে তার মনে। তাছাড়া ঘরের মেঝেতে নিম্নমানের প্লাস্টার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তার। তবে একখানি বাড়ি পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি চরম কৃতজ্ঞ মালা খাতুন ।
জহুরা বেওয়া (৬০), আলআমিন ফকির (২৪), হাফেজা(৩৬), সাদেকুল বারী (৩৭), লাবলী (৪০),আকতার বানু (২৬)সহ আরও অনেকে জানায়, তাদের বরাদ্দকৃত বাড়ির প্লাস্টার চটে যাচ্ছে এখনি। তাছাড়া জানালা দরজার পাল্লাগুলো খুলে পড়েছে। আবার কিছু জানালা দরজা আধা খোলা অবস্থায় রয়েছে। যেগুলো জানালা -দরজার পাল্লা যুক্ত আছে, সেগুলো আবার বন্ধ করার জন্য আটকানো যায় না।
অবশ্য ভিত্তিপ্রস্তরস্থাপন কাজ ভাল হয়েছে বলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন বরাদ্দপ্রাপ্তরা।
তারা সরকারী বরাদ্দকৃত অর্থে বসবাসের জন্য বাড়িগুলোতে প্রয়োজনীয় কাজ করার দাবি জানায়। সেইসাথে ঈদ উপহারের ঘর পেয়ে খুশি প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করেন তারা।
দুপচাঁচিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এএইচএম আশরাফুল আরেফিন বরাদ্দপ্রাপ্তদের অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, ঈদ উপহারের বাড়িগুলো এখনও পুরোপুরি বরাদ্দপ্রাপ্তদের বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। এখনও কিছু কাজ বাকি আছে। নির্মিত ঈদ উপহারের বাড়ি এলাকায় বৈদ্যূতিক সংযোগ না থাকায় দরজা -জানালাতে ওয়েল্ডিং এর কাজ ঠিকমত করা যায়নি। বৈদ্যূতিক সংযোগ পাওয়ার পর খুলে পড়ে যাওয়া দরজা জানালার পাল্লাগুলো লাগিয়ে দেয়া হবে।
নিম্নমানের প্লাস্টার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, ঈদের পর এক সপ্তাহের মধ্য ছোটখাট ত্রুটিগুলো মেরামত করে দেয়া হবে।
Leave a Reply