দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি:
বগুড়া দুপচাঁচিয়া উপজেলায় করোনার ছোবলে ভালো নেই ফার্ণিচার ব্যবসায়ীরাও। দীর্ঘ প্রায় আট মাস লকডাউনে দোকান বন্ধ থাকায় এবং করোনার কারণে বিবাহ-সাদি ও সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো সহ বিভিন্ন মেলা বন্ধ থাকায় উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক ফার্ণিচার ব্যবসায়ী তাদের তৈরীকৃত ফার্ণিচার বিক্রি করতে না পেরে চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
বগুড়ার ১২টি উপজেলার মধ্যে দুপচাঁচিয়া একটি উল্লেখযোগ্য। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় সকল শ্রেণীর মানুষ তাদের ব্যবসা-বানিজ্য, কেনা-কাটা কাজে এই দুপচাঁচিয়া উপজেলার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে। উপজেলা সদরেই শুধু পৌর এলাকায় জেলা শহরের সাথে পাল্লা দিয়ে গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক অত্যাধুনিক ফার্ণিচারের দোকান।
করোনা ভাইরাসের কারনে গত এপ্রিল মাস থেকে লকডাউনে এইসব ফার্ণিচার ব্যবসায়ীদের দোকান বন্ধ রাখে। দীর্ঘ প্রায় আট মাস পর দোকানগুলো খুললেও করোনা ভাইরাসের কারণে বিভিন্ন বিবাহ সহ সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো প্রায় বন্ধ রয়েছে। সেই সাথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য বিভিন্ন মেলা বন্ধ। ফলে ফার্ণিচার ব্যবসায়ীদের বিক্রি বহুলাংশে কমে গেছে। এ কারণে বিপাকে পড়েছেন ফার্ণিচার ব্যবসায়ীরা। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার ফার্ণিচার পট্টি হিসাবে পরিচিত ধাপহাট সংলগ্ন সড়কের দু’ধারে বিভিন্ন ফার্ণিচারের দোকানে খোঁজ নিয়ে এমনই চিত্রই পাওয়া গেছে।
ওই এলাকার নজরুল ফার্ণিচারের সত্বাধিকারী ফিরোজ হোসেন, লাভ ফার্নিচারের আব্দুল আলিম, মা ফার্ণিচারের দুলাল হোসেন, ভাই বোন ফার্ণিচারের আলহাজ্ব গুলজার হোসেন ফার্ণিচার ব্যবসায়ী আব্দুল বাছেদ সহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা জানান, উপজেলার সদরের ধাপহাটকে কেন্দ্র করে এই সড়কের দু’পার্শে ফার্ণিচারের দোকান সহ কারখানা গড়ে ওঠে। শুধু এই ধাপহাট এলাকার সড়কের দু’ধারেই প্রায় ২০টি ফার্ণিচারের দোকান সহ ছোট খাটো কারখানাও রয়েছে। এছাড়াও উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় অনুরুপ আরো ২০ থেকে ২৫টি ফার্ণিচারের দোকান সহ শোরুম রয়েছে। এই দোকানগুলোতে খাট, শোকেস, ডেসিনটেবিল, সোফাসেট, চেয়ার টেবিল সহ প্রচুর ফার্ণিচার তৈরি করা হয়েছে।
তৈরীকৃত মালামালগুলো দোকান ছাড়াও বিভিন্ন মেলায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি হতো। করোনার কারনে দীর্ঘদিন কোন বিক্রি হয়নি। এখন দোকানগুলোতে বিক্রির মতো প্রচুর ফার্নিচার রয়েছে। দীর্ঘসময় দোকান বন্ধ এখন দোকান খুলে রাখলেও ক্রেতা নেই বললেই চলে। পরিচিত দুই-একজন ক্রেতা আসে, দাম জিজ্ঞাসা করে চলে যায়। তারা সহ অনেক ফার্ণিচার ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছে। বেচা-কেনা না থাকায় ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে পারছে না। এদিকে ফার্ণিচারের কারখানাগুলোতে অগ্রিম টাকা দিয়ে মিস্ত্রী নিয়োগ করেছে।
তাদেরকে দৈনন্দিন ভাতা নিয়মিত দিতে হচ্ছে। এতেও তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে এ ব্যবসা করে জীবন ধারণ করা তো দূরের কথা তাদেরকে পথে বসতে হবে বলে তারা এমনই অভিমত ব্যক্ত করেছে। সব মিলিয়ে উপজেলার ফার্ণিচার ব্যবসায়ীদের চরম দুর্দিন চলছে।
Leave a Reply